শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৩

আহারে সাজেদা চৌধুরী

আজব দুনিয়ার আজব বাংলাদেশ ! রাজাকারদের ফাসিঁর দাবীতে ৪ বছর ধরে চলেছে গলাবাজিঁ। রাজাকারদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে কান্নাকাটির শেষ  ছিল না! এখন আওয়ামী সরকারের বিদায় লগ্নে এসে  ১৯৭১ সালের একজন একনিষ্ঠ রাজাকারকে রাষ্ট্রপতি বানানোর চেষ্টা চলছে! সেই আওয়ামী মেশিনের কথা মনে পড়ে গেল! যেই মেশিনের কল্যাণে Certified Razakar সাজেদা চৌধুরী এখন রাষ্টপ্রতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর!
সাজেদা চৌধুরী - Certified Razakar !
১৯৭০ সালের নির্বাচন। আওয়ামীলীগের ১৬৭জন নির্বাচনে  জয়ূী হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠার ভিত্তিতে ক্ষমতা লীগকে দেয়ার কথা। সেটা না করে বরং সরকার বিজয়ী ১৬৭ জনের সংসদের সদস্যপদ বাতিল করে! শর্ত জুরে দেন যারা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এর উপর আনুগত্য প্রকাশ করবে তাদের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেয়া হবে! আওয়ামীলীগের বর্তমান সংসদ উপনেতা মাননীয়া সাজেদা চৌধুরী সুযোগটি লুফে নেন! ক্ষমতা পাওয়া বলে কথা! সেই লোভে তিনিসহ ৮৮জন সংসদসদস্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও তার গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানের সরকারের প্রতি আনুগত্যপ্রকাশ করে। ফলও আসতে দেরী হলো না। ৭ই আগষ্ট ১৯৭১ সালে এক প্রেসনোটের মাধ্যমে তাদের তাদের সদস্যপদ পুনর্বহাল করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে এই English বইটায়তে কিছু তথ্য পাবেন : Encyclopedia of South Asia: Bangladesh


পাকিস্তান সরকার গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ঐ ৮৮ জন আওয়ামী লীগ এমপির নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা এবং সংসদীয় এলাকার উল্লেখ করে তালিকা প্রকাশ করেছিল। এই তালিকার ৮৪ নম্বরেই রয়েছে সাজেদা চৌধুরীর নাম । বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এত বড় নেত্রী টিক্কা খানের আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছিল ? হায়রে লজ্জা রাখি কোথায়! 



 দুর্নীতিবাজে ও লোভী সাজেদা চৌধুরী !

আগেরবার লীগ সরকারের আমলে সাজেদ চৌধুরী ছিলেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ! ক্ষমতার এক্কেবারে সঠিক ব্যবহার করেছেন তিনি! মন্ত্রীকালীন সময়ে প্রতি মাসে বনবিভাগ থেকে চাদাঁ হিসেবে প্রায় ২৫ লাখ টাকা গ্রহণ করতেন! পাঠকবৃন্দ এটা আমার কথা নয় ! এই দুর্নীতি ফাঁস করেছিলেন ২০০৭ এ যৌখবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া প্রধান বনসংরক্ষক ওসমান গনি ও ঢাকা বিভাগীয় বন সংরক্ষক আলি কবির হায়দার! তারা আরো জানান, সাজেদা ঘুষের বিনিময়ে বন বিভাগের বদলী ও পদোন্নতী বানিজ্য  চালাতেন! ২০০৮ সালের ১০ জুলাই দুদক রমনা থানায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সাজেদা চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা করে! যদিও সেটা ক্ষমতায় আসার পর পোষা আদলত দিয়ে মামলা বাতিল করা হয়। লিঙ্ক : সাজেদা চৌধুরীর দুর্নীতি মামলা বাতিল


বনখেকোর মা খ্যাত সাজেদা চৌধুরী !

যোগ্য মায়ের যোগ্য সন্তান। বা..বা..বাহ ! মা বন খেয়ে উজার করে ফেলছে। ছেলে কি বসে থাকতে পারে ? না। যোগ্য ছেলে মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে কৃপনতা করে নাই! সাজেদা চৌধুরীর পু্ত্র লাবু বিভিন্ন সময় মায়ের প্রভাব খাটিঁয়ে কাঠ ও গোলপাতা বিক্রির অনুমতি পত্র বিক্রি করতেন। এছাড়া বনবিভাগের ৩৫ একর জলাভূমি মাছ চাষের জন্য অবৈধভাবে ইজারা নিয়েছিলেন লাবু। লাবুর এহিন মাতৃভক্তি কার্যকলাপ এর দরুণ তাকে নিয়ে সাপ্তাহিক প্রোবে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। এই তো 
কিছু দিন আগে শ্রমমন্ত্রী তো প্রকাশ্যেই যোগ্য সন্তানের কুকীর্তি স্মরণ করিয়ে দিলেন! লিঙ্ক : আমার বাবাকে রাজাকার বলে সাজেদা ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন : শ্রমমন্ত্রী । Suspense এখানেই শেষ নয় !  তার অপরাধের কারণে ১২ বছর জেল হয়েছিল! কিন্তু মহামান্য রাষ্ট্রপতি দয়াপরায়ণ হয়ে তাকে ক্ষমা করে দেন!  আহা! কি মায়া গো! লিঙ্কটি ঘুরে আসতে পারেন : রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের দায়িত্ব শুধু খুনী আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের ক্ষমা প্রদর্শন করা?


সংবিধান লঙ্গনকারী ও আদালত অবমাননাকারী সাজেদা চৌধুরী !

২০১২ সালের নভেম্বর মাসে আওয়ামীলীগের এক মতবিনিময় সভায় সাজেদা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মালিক আওয়ামী লীগ! আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী না হলে দেশে থাকা যাবে না! অথচ বাংলাদেশ এর সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক হলো এ দেশের জনগণ। অন্যদিকে দেশে কারা থাকবেন আর কারা থাকবেন না তারও আইন ও সংবিধানের বাইরে বক্তব্য। লিঙ্ক : বাংলাদেশের মালিক আওয়ামী লীগ : সাজেদার বক্তব্য সংবিধান লঙ্ঘন ! ভাগ্য ভাল দল ক্ষমতায়। নইলে জেলখানার শক্ত ভাত ক্ষেতে হতো! 
ম্যাডাম তো প্রায়ই আদালত অবমাননা করেন! যুদ্ধাপরাধ আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সাজেদা বলেছিলেন : ‘‘রাজাকাররা আইন মেনে একাত্তরে নির্যাতন করে নাই। কাজেই এত আইন দেখলে হবে না। বসে বসে আইন কপচালে হবে না। আগেই দুই-একটাকে ঝুলিয়ে দিলে ওদের আইন কপচানি বন্ধ হবে!’’  লিঙ্ক : অবমাননা : সাজেদার বক্তব্য শুনবে ট্রাইব্যুনাল

মানসিক বিকারগ্রস্থ সাজেদা চৌধুরী

যদিও এই ব্যাপারে কারো কোন সন্দেহ নাই! তাওপরও চিন্তা করলাম ২-১ লাইন না লিখলে তার  চারিত্রিক অবমূল্যায়ন করা হবে! 
* নভেম্বর ২০১২ সালে বলেন, রাজাকারদের দেশ ছাড়া করতে হবে। অথচ নিজে এখনও দেশে ছাড়া হননি! ( যদিও বর্তমান পরিস্থিতি দেশ ছেড়ে পালানোর সম্ভাবনা িউড়িয়ে দেয়া যায় না ! ) 
* ডিসেম্বর ২০০৯ এ বলেন, সব রাজাকার ও তাদের সহযোগীদের বিচার হবে। চোরের মার বড় গলা আর কি!
* এবার একটা ভিডিও দেখেন! ( ইউটিউব লিঙ্ক ) দেশে গুম আর হত্যার রাজনীতি নাই, আর আসতে দেয়া হবে না! অথচ সররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে বলেছেন : ৪ বছরে খুন ১৬ হাজার, গুম ও অপহরণ ৩ হাজার ! আমার দেশ পত্রিকার এই রিপোর্ট ঘুরে আসতে পারেন: এলাকাভিত্তিক জনপ্রিয় নেতারা গুম ও হত্যার শিকার হচ্ছেন !
কয়েকটা উদাহরণ দিলাম মাত্র। সব দিলে কয়েক শত লাইন লেখা লাগবে!

যদি সাজেদা রাষ্ট্রপতি হন !

কোন সমস্যা নাই। তার নামে তো হাজারো অভিযোগ ও বিতর্ক । যেহেতু রাষ্ট্রপতি থেকে বিদায় করার একমাত্র উপায় সংসদে Impeachment! সেই হিসাব চিন্তা করলে তাকে সহজেই ইমপিচমেন্ট সম্ভব!  কারণ তার বিরুদ্ধে অনেক সুনীর্দিষ্ট অনেক অভিযোগ আছে:  সার্টিফাইড রাজাকার! দুর্নীতিবাজ! বনখেকোর মা! মানসিক বিকারগ্রস্থ! যদিও অভিযোগ তদন্তের পর সংসদের ২/৩ ভাট লাগে, কিন্তু লীগের বর্তমান জনপ্রিয়তা দেখে তো মনে হয় হাতে গোনা ৪-৫ সিট পাবে! 


যাই হোক! তরুণ প্রজন্ম অপেক্ষর প্রহর গুনছে।  আওয়ামী মেশিনে রাজাকারের কলঙ্ক থেকে মুক্ত পাওয়া সাজেদা যে কোন সময় রাষ্ট্রপিতির আসন নিতে পারেন। কিন্তু বর্তমান ঘটনাপ্রবাহ দেখে মনে হয় সে তো এমনিতেই দেশ পালানোর চিন্তা করছেন! এমতাবস্থায় কি তিনি সাহস করবেন ? সময়ই বলে দিবে। তবে তার অপরাধের বিচার একদিন হবেই !
0

Add a comment

আজব দুনিয়ার আজব বাংলাদেশ ! রাজাকারদের ফাসিঁর দাবীতে ৪ বছর ধরে চলেছে গলাবাজিঁ। রাজাকারদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে কান্নাকাটির শেষ  ছিল না! এখন আওয়ামী সরকারের বিদায় লগ্নে এসে  ১৯৭১ সালের একজন একনিষ্ঠ রাজাকারকে রাষ্ট্রপতি বানানোর চেষ্টা চলছে! সেই আওয়ামী মেশিনের কথা মনে পড়ে গেল! যেই মেশিনের কল্যাণে Certified Razakar সাজেদা চৌধুরী এখন রাষ্টপ্রতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর!
সাজেদা চৌধুরী - Certified Razakar !
১৯৭০ সালের নির্বাচন। আওয়ামীলীগের ১৬৭জন নির্বাচনে  জয়ূী হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠার ভিত্তিতে ক্ষমতা লীগকে দেয়ার কথা। সেটা না করে বরং সরকার বিজয়ী ১৬৭ জনের সংসদের সদস্যপদ বাতিল করে! শর্ত জুরে দেন যারা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এর উপর আনুগত্য প্রকাশ করবে তাদের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেয়া হবে! আওয়ামীলীগের বর্তমান সংসদ উপনেতা মাননীয়া সাজেদা চৌধুরী সুযোগটি লুফে নেন! ক্ষমতা পাওয়া বলে কথা! সেই লোভে তিনিসহ ৮৮জন সংসদসদস্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও তার গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানের সরকারের প্রতি আনুগত্যপ্রকাশ করে। ফলও আসতে দেরী হলো না। ৭ই আগষ্ট ১৯৭১ সালে এক প্রেসনোটের মাধ্যমে তাদের তাদের সদস্যপদ পুনর্বহাল করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে এই English বইটায়তে কিছু তথ্য পাবেন : Encyclopedia of South Asia: Bangladesh