মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০১৩

১০ মিনিটের নৃশংসতা

১০ মিনিটের নৃশংসতা ঝটিকা অভিযানে হাজার হাজার তৌহিদী জনতা নিহত ও অসংখ্য আহত দাবি হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপি’র
অসংখ্য গুলি, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে নৃশংস, বর্বর ও ইতিহাসের জঘন্যতম হামলা চালানো হয় হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে
ইনকিলাব রিপোর্ট : রাজধানী মতিঝিলের শাপলা চত্বরকে ঘিরে হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে মধ্যরাতে ঝটিকা অভিযান চালায় র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি’র ১৫ থেকে ২০ হাজার সদস্য। দৈনিক বাংলা ও ফকিরাপুল মোড়সহ তিন দিক থেকে অপারেশন শুরু করা হয়। পরে একযোগে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে অসংখ্য গুলি, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে নৃশংস, বর্বর ও ইতিহাসের জঘন্যতম হামলা চালানো হয়। তখন ইত্তেফাক মোড় ঘিরে রাখে র‌্যাবের শত শত সদস্য। অভিযানের সময় সশস্ত্র অপারেশনের আওয়াজে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে মতিঝিল ও এর আশপাশের এলাকা। রাত আড়াইটা থেকে শুরু হওয়া এই যৌথ অভিযানে ১০ মিনিটের মধ্যেই হেফাজত ইসলামের প্রায় এক লাখ নেতা-কর্মীকে মতিঝিল থেকে হটিয়ে দেয়া হয়। এ সময় তারা যাত্রাবাড়ি ও ডেমরার দিকে চলে যান। ঝটিকা অভিযানে হাজার হাজার তৌহিদী জনতা নিহত ও অসংখ্য আহত হয়েছেন বলে বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা দাবি করেছেন। অভিযানের পর পরই আন্তর্জাতিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন ওয়েব সাইটে অভিযানের বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন ওয়েব সাইটে শত শত লাশের ছবি দেখা গেছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বসে পুরো অভিযান পর্যবেক্ষণ করেন আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। নৃশংস এ অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান লেঃ কর্নেল জিয়া, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মারুফ হাসান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অর্থ) আব্দুল জলিল মন্ডল। অভিযানের সময় এপিসি (আর্মার্ড পার্সোন্যাল কেরিয়ার) থেকেও শত শত রাউন্ড গুলি  ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে। সরকার মনে করছে, এ মুহূর্তে কোনো সভা-সমাবেশের অনুমতি দেয়া হলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। সে জন্যই মধ্যরাত পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকারের প্রতিটি বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। কোথাও কোনো ধরনের ঘটনা ঘটলে তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর প্রচার সেল প্রধান মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল বলেন, মতিঝিলের শাপলা চত্বরকে ঘিরে হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে মধ্য রাতে নিরীহ জনতার উপর বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তাতে হাজার হাজার জনতার প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে। তারা শহীদ হয়েছেন। ২০ সহস্্রাধিক মানুষকে পঙ্গু করেছে। তা ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা সাংবাদিকদের বলেন, মতিঝিলে রোববার রাতে অবস্থান নেয়া হেফাজতে ইসলামের ‘সহস্রাধিক’ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন এবং তাঁদের শত শত লাশ গুম করা হয়েছে। খোকার দাবি, হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার মধ্যরাতে হামলা চালিয়েছে। এটিকে তিনি ‘গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
সূত্র জানায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকেই সতর্ক ও সশস্ত্র অবস্থান গ্রহণ করেন। চরম অভিযানে শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তারা অ্যাকশনে নামেন। অভিযানে পুলিশের পাশাপাশি অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক র‌্যাব ও বিজিবি সদস্য। পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মারুফ হাসান অভিযানের পূর্বে ডিএমপি অ্যাক্টের কোন ধারা অনুযায়ী এবং কিভাবে অভিযান পরিচালিত হবে, কোন কোন ধরনের অস্ত্র এবং যানবাহন ও সামগ্রী ব্যবহার করা হবে এ ব্যাপারে যৌথ বাহিনীকে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং করেন। সে অনুযায়ী অভিযানে রাবার বুলেট, বুলেট, টিয়ার গ্যাস শেল, পিপার গান এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করার কথা। কিন্তু অভিযানের শুরুর পরপরই দেখা যায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সাথে থাকা চাইনীজ রাইফেল এবং একে-৪৭ এর মতো অটোমেটিক রাইফেল দিয়েও মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ করছে। আর এর ফলেই হতাহতের সংখ্যা মুহূর্তেই হাজার ছাড়িয়ে যায়।
গতকাল সকালে ফকিরাপুল পেট্রোল পাম্পের বিপরীতের এক আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি সারা রাত তার ভবনের ছাদে বসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজত খেদাও অভিযান প্রত্যক্ষ করছিলেন। অভিযানের পরপরই তিনি ট্রাকে করে নীল পলিথিনে ঢেকে ট্রাকভর্তি লাশ নিয়ে যেতে দেখেছেন। অনেকেই গোপনে এসব দৃশ্য ভিডিও করেছ্নে। অভিযানের সময় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সিভিল পোশাকে বেশ কিছু লোকজন অংশ গ্রহণ করে। তারা আহত হেফাজত কর্মীদের উপর নির্মম নির্যাতন চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, টানা অবস্থানের ঘোষণা দেয়া হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের গভীর রাতে ১০ মিনিটের ঝটিকা অভিযানে মতিঝিল থেকে উৎখাত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ৫ মে রোববার দিনভর সংঘাতে ১৬জন নিহত হওয়ার পর রাত আড়াইটার দিকে মতিঝিলে ঝটিকা অভিযান শুরু করে র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ। মূল অপারেশনের আগেই ওই এলাকার ডিস লাইন ও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করা হয়। দৈনিক বাংলা ও ফকিরাপুল মোড় থেকে এক যোগে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে অসংখ্য গুলি, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে নৃশংস, বর্বর ও ইতিহাসের জঘন্যতম হামলা চালানো হয়। তখন ইত্তেফাক মোড় ঘিরে রাখে র‌্যাবের শত শত সদস্য। অভিযানের সময় সশস্ত্র অপারেশনের আওয়াজে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে মতিঝিল ও এর আশপাশের এলাকা। কাঁদানে গ্যাস ও বুলেটে টিকতে না পেরে বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পড়েন মতিঝিলে অবস্থানকারীরা।
রাত আড়াইটায় র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের যৌথ ঝটিকা অভিযানের আগে পুলিশ ও র‌্যাবের কর্মকর্তারা হ্যান্ডমাইকে হেফাজতকর্মীদের মতিঝিল ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে অবস্থানকারীরা। ১৫ থেকে ২০ হাজার র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্য যখন অভিযান শুরু করেন, তখনো প্রায় এক লাখ কর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশ মঞ্চ থেকে বিভিন্ন সেøাগান দেয়া হচ্ছিল, চলছিলো বক্তব্যও। ফকিরাপুল হয়ে নটরডেম কলেজ ও দৈনিক বাংলা থেকে র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ একযোগে অভিযান শুরু করে ১০ মিনিটের মধ্যে মতিঝিলে শাপলা চত্বরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন ট্রাকের ওপর নির্মিত অস্থায়ী সমাবেশ মঞ্চে হেফাজতের কোনো নেতাকে দেখা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী হাসান জানান, ঝটিকা অভিযানে অংশ গ্রহণকারীরা বৃষ্টির মতো গুলি চালায়। গুলি, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে নৃশংস হামলায় নিরস্ত্র হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা টিকতে না পেরে এক পর্যায়ে আর কে মিশন রোডের চৌরাস্তা দিয়ে গোপিবাগ ও টিকাটুলির মোড় দিয়ে ডেমরার দিকে চলে যায়। তখন ইত্তেফাক মোড়ে সশস্ত্র র‌্যাব-বিজিবি অবস্থান করায় কেউ সামনে এগোতে পারেনি।  র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির নির্মম সশস্ত্র হামলার সময় হেফাজত ইসলামের নেত্-াকর্মীরা ইট পাটকেল ছুড়ে মোকাবেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্রের কাছে তারা টিকতে পারেননি। ঝটিকা অভিযানের সময় অসংখ্য হেফাজত কর্মীকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঝটিকা অভিযানে অংশ নেয়া আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দু’জন সদস্য দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঝটিকা অভিযানের আগেই বিপুল সংখ্যক ট্রাক আনা হয়। তাছাড়া অভিযানের পর দ্রুত এলাকা পরিষ্কার করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের লোকজনকে অপেক্ষমাণ রাখা হয়। অভিযানের পর পরই তারা মতিঝিল এলাকায় পরিষ্কারের জন্য মাঠে নামেন। প্রাথমিকভাবে অভিযানের বিভিন্ন ধরনের আলামত এবং হতাহতদের রক্তও পরিষ্কার করা হয়। হেফাজতকর্মীরা চলে যাওয়ার পর মতিঝিলের সড়কে অসংখ্য কাগজ, স্যান্ডেল এবং কিছু ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রাখা কাগজে আগুনও জ্বলছিল। পুড়িয়ে দেয়া পাঁচটি গাড়িও দেখা যায় সড়কের পাশে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ঠেকাতে সড়ক বিভাজকের স্টিলের বেড়া ভেঙে সড়কের ওপর আড়াআড়ি করে রেখেছিল হেফাজতকর্মীরা। সেখান থেকে ইট খুলেও তারা টুকরো টুকরো করে রাখে, যা পুলিশের দিকে ছোড়া হয়।
গতকাল ভোর রাতে হেফাজত ইসলামে বেশ কয়েকজন কর্মী জানান, র‌্যাব-পুলিশের অভিযানের মুখে মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে গেল মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকা। কয়েক স্তরের মানব ঢাল দিয়ে নিরাপত্তা ব্যুহ তৈরি করেও টিকতে পারলো না শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। মূলত: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোকাবেলায় এই ব্যুহ তৈরি করেছিল তারা। এর আগে র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লে. কর্নেল জিয়াউর আহসান হেফাজতের কর্মীদের শাপলা চত্বর ছাড়ার নির্দেশনা দেন। এ নিয়ে হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে তার কথাও হয়। মাইকিং করে সতর্ক করা হয়। এরপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ও অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে সরিয়ে দেয়া হয় হেফাজতের কর্মীদের। এ সময় হাজার হাজার নেতা-কর্মী নিহত ও অসংখ্য আহত হয়েছে বলে তাদের দাবি।

হেফাজতে ইসলামের উপর

স্বার্থবাদী মিডিয়া যুবলীগের সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মরিয়াস্টাফ রিপোর্টার : মার্কিন পাদ্রী টেরী জোনস ২০১০ সালে পবিত্র কুরআনে আগুন দেয়ার ফলে বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে ক্ষতের সৃষ্টি করে। নানা দেশের মতো প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও। আর বাংলাদেশে সেইসব প্রতিবাদ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের সাথে যুক্ত হাক্কানী আলেম ও তাদের সমর্থকরা।
অথচ মাত্র তিন বছর পর এ বাংলাদেশেই টেরী জোনসের সেই একই নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। কিন্তু এবার পটভূমি ভিন্ন। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আজ্ঞাবহ এদেশি স্বার্থবাদী কিছু মিডিয়া এ ঘটনার নায়ক যুবলীগ সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মরিয়া। শুধু তাই নয়, তারা এর দায় চাপাতে চাচ্ছে খোদ আলেম ওলামাদের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের উপর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রোববার বাদ আসর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট দিয়ে বেরিয়ে আসছিল মুসল্লিরা। এসময় পূর্ব থেকেই সেখানে অবস্থান নেয়া যুবলীগ সন্ত্রাসীরা মুসল্লিদের মধ্যে যাদেরকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী কিংবা আলেম মনে হয়েছে, তাদেরকেই লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধরক পেটাতে থাকে। পুলিশ এসময় সন্ত্রাসীদের পাশে নীরব দাঁড়িয়ে থাকে। জীবন বাঁচাতে মরিয়া মুসল্লিরা এ অবস্থায় আর দক্ষিণ গেট মারাননি।
ঠিক তখনই ঘটে চরম অঘটন। যুবলীগ সন্ত্রাসীরা দক্ষিণ গেটের ফুটপাতে বন্ধ থাকা ইসলামী বই ও কোরআন শরীফের দোকানে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া তারা ১৫-২০টি জুতার দোকানেও তারা একইভাবে আগুন দেয়। সংঘর্ষ পরিস্থিতির কারণে রোববার বন্ধ ছিলো ফুটপাতের এসব দোকান। মোড়ানো ছিলো পলিথিন দিয়ে। আগুনের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। প্যান্ট-গেঞ্জির দোকান ছাড়াও এসময় পুড়ে যায় কোরআন শরীফসহ বিভিন্ন ধর্মীয় পুস্তকের দোকান।
এসময় সেখানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এবং সেই দোকানগুলোর দু’একজন মালিকও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অস্ত্র হাতে দাড়িয়ে থাকা সন্ত্রাসী এবং পুলিশের ভয়ে কেউ প্রতিবাদের সাহস পায়নি।
এদিকে গতকাল বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বলা হয় যে, বায়তুল মোকাররম মসজিদে অবস্থিত বই এর দোকানে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেবাশীষের নেতৃত্বে লুটপাট এবং পবিত্র কোরান শরীফসহ ধর্মীয় গ্রন্থসমূহে অগ্নিসংযোগ করা হয়। যা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবরে দেবাশীষের ছবিসহ প্রচার করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাস্তব প্রমাণ সত্ত্বেও উক্ত ঘটনা হেফাজতে ইসলাম করেছে বলে অপপ্রচার চালিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আর এরপরই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আজ্ঞাবহ এদেশি স্বার্থবাদী কিছু মিডিয়া এ ঘটনার নায়ক যুবলীগ সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মাঠে নেমে পড়ে। ইসলামের সাথে যুক্ত কোন বিষয়ে যারা সর্বদাই নিরাসক্ত এখন ঢালাওভাবে হেফাজতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নাস্তিকদের রক্ষা করার চেষ্টায় লিপ্ত সেই মিডিয়াগুলো। কিন্তু তারা এসব সংবাদে একটি প্রমাণও উপস্থাপন করছে না। পত্রিকা এবং টেলিভিশনে এ ঘটনার ফুটেজ দেখে অপরাধীদের বের করারও কোন চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্টদের। অথচ বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলে পল্টন এলাকায় জিন্সের প্যান্ট ও গেঞ্জী পরিহিত এবং হেলমেট মাথায় দেয়া লম্বা শারিরীক গঠনের কয়েক যুবককে হাতে পেট্রোলের বোতল নিয়ে বইয়ের দোকানগুলোতে আগুন দেয়ার ফুটেজ প্রচার করা হয়েছে। 
অপরদিকে সরকারও হেফাজতের ঘাড়ে এ ঘটনার দায় চাপানোর জন্য পুরো মতিঝিল, পল্টন এবং বিজয়নগরের পোড়া সামগ্রী এবং আবর্জনা পরিষ্কার করে ফেললেও গতকাল বিকেল পর্যন্ত আগুনে পোড়া কুরআনের অবশিষ্টাংশ রেখে দেয়। আবার বিভিন্ন টিভি মিডিয়াকে আমন্ত্রণ করে এনে সংবাদ তৈরি করতে থাকে। সেখানে এমনসব লোকের মতামত নিতে থাকে যারা ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিল না। এর মাধ্যমে ঐসব মিডিয়া আলেমদের বিরুদ্ধে জনগণকে খেপিয়ে তোলার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।

সোমবার, ৬ মে, ২০১৩

কি চাও

Norul Abcar shared কম্বল চোর আওয়ামিলীগ ও বিশ্ব চোর আওয়ামিলীগ's photo.
আমি কাঁদিতে চাহিয়া, কাঁদতে পারিনি। করিতে পারিনি চিৎকার…

আমি দেখিনি ২৫ মার্চের কালো রাত্রি কিন্তু দেখেছি ৫ মের আওয়ামী নরপশুদের হত্যাকান্ড.… কী দোষ করেছি আমরা। একটি সরকার গুটি কয়েক নাস্তিকদের বাঁচানোর জন্যে সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের উপর হায়েনার মত গুলি করছে… হে আল্লাহ, আমরা তোমার দ্বীন ইসলামকে প্রতিষ্টার জন্যে লড়াই করছি, তুমি আমাদের এ জালিম, মুনাফিকদের হাত থেকে রক্ষা করো। আমাদেরকে শক্তি দাও, হিকমত দাও..… আমরা তোমার কুদরতি সাহায্যের অপেক্ষায়..

Masoud Mohammed

Shahadat Hossain shared বাংলার বাঘ. বেচে থাক's photo.
Masoud Mohammed
[প্লীজ এড়িয়ে যাবেন না! এক মিনিট বিরতি দিয়ে হলেও এই লিখাটি পড়ুন]

দেশের এই ক্রান্তিকালে সেনাবাহিনীর নিরবতা দেখে আমি যতটা না অবাক হয়েছি, তার চেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছি! ক্ষোভের আগুনও জ্বলছে বুকে এই কাপুরুষ নিয়ে আমরা এতদিন গর্ব করতাম! আফসোস হচ্ছে! ভীষণ আফসোস হচ্ছে!

সাভার ট্রাজেডির সামান্য কিছুদিন আগেও আমাদের এলাকার এক ছোট ভাইকে আমি বলেছিলাম, দেশে সামরিকবাহিনীর মধ্যে একমাত্র খাঁটি দেশপ্রেমিক থাকলে আমাদের সেনাবাহিনী-ই আছে!

অথচ এই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর নিরবতাতেই ঘটে গেলো এদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণ হত্যা! আফসোস আমাদের বুঝতে দেরি হয়েছে যে সেনাবাহিনীও সরকারের পা চাটা গোলাম!

আসলে আমাদের সেদিনই বোঝা উচিত ছিল, যেদিন তারা বলেছিলো, হাসিনার উৎসাহেই তারা সাভারের রানা প্লাজার উদ্ধার তৎপরা চালাতে মনের জোর পেয়েছিলো!

হে প্রিয় দেশবাসী! একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো উপর ভরসা করে বসে থাকলে আমরা বিরাট ভুল করবো! ইসলাম টিকিয়ে রাখতে, ঈমান বাঁচাতে ও দেশ থেকে আগাছাগুলো পরিষ্কার করতে আমাদেরকে উচিত রাজপথে নেমে পড়া।

ভয় নেই। আল্লাহ আমাদের সাথেই আছেন।
Masoud Mohammed
[প্লীজ এড়িয়ে যাবেন না! এক মিনিট বিরতি দিয়ে হলেও এই লিখাটি পড়ুন]

দেশের এই ক্রান্তিকালে সেনাবাহিনীর নিরবতা দেখে আমি যতটা না অবাক হয়েছি, তার চেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছি! ক্ষোভের আগুনও জ্বলছে বুকে এই কাপুরুষ নিয়ে আমরা এতদিন গর্ব করতাম! আফসোস হচ্ছে! ভীষণ আফসোস হচ্ছে!

সাভার ট্রাজেডির সামান্য কিছুদিন আগেও আমাদের এলাকার এক ছোট ভাইকে আমি বলেছিলাম, দেশে সামরিকবাহিনীর মধ্যে একমাত্র খাঁটি দেশপ্রেমিক থাকলে আমাদের সেনাবাহিনী-ই আছে!

অথচ এই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর নিরবতাতেই ঘটে গেলো এদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণ হত্যা! আফসোস আমাদের বুঝতে দেরি হয়েছে যে সেনাবাহিনীও সরকারের পা চাটা গোলাম!

আসলে আমাদের সেদিনই বোঝা উচিত ছিল, যেদিন তারা বলেছিলো, হাসিনার উৎসাহেই তারা সাভারের রানা প্লাজার উদ্ধার তৎপরা চালাতে মনের জোর পেয়েছিলো!

হে প্রিয় দেশবাসী! একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো উপর ভরসা করে বসে থাকলে আমরা বিরাট ভুল করবো! ইসলাম টিকিয়ে রাখতে, ঈমান বাঁচাতে ও দেশ থেকে আগাছাগুলো পরিষ্কার করতে আমাদেরকে উচিত রাজপথে নেমে পড়া।

ভয় নেই। আল্লাহ আমাদের সাথেই আছেন।

অপারেশন ফ্রিডম


গতরাতে মতিঝিল ‘অপারেশন ফ্রিডম' নামক গণহত্যার বিবরণঃ
(Exclusive News...By News & Entertainment)
(১০০% সঠিক সংবাদ, সুত্রঃ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কয়েকজন পুলিশ,
আল্লাহর কসম প্রতিটি লাইন সেই পুলিশদের বলা)

অপারেশনঃ
গতকাল রাতের গনহত্যায় মৃতেরসংখ্য‍া ২৫০০ (আড়াই হাজার) এরও বেশি,
গনহত্যায় অংশ নেয় র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও প্রফেশনাল শুটার এর দল...
প্রফেশনাল শুটারদের কথা সাধারন মানুষ জানতেই পারেনি.....
কারন, প্রফেশনাল শুটাররা সব উচু ভবনের ছাদে ছিল, এবং তারা ব্যবহারকরেছে স্নেইপার রাইফেল, যা বাংলাদেশের কোন বাহিনী এই প্রথম ব্যবহার করল....
র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবির কয়েকটি টিম একসাথে ব্রাশফায়ার করা শুরু করে....
ঠিক একই সময়ে প্রফেশনাল শুটাররা স্নেইপার রাইফেল দিয়ে বুক ও মাথা তাক করে গুলি করে...
একই সাথে চলে টিয়ার শেল, গরম পানি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ..
বেশিরভাগ হেফাজত কর্মীরা ঘুমিয়ে থাকায় হঠাত চতুর্মুখি আক্রমনে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে হেফাজতকর্মীরা...কিছু হেফাজত কর্মী প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেওব্রাশ ফায়ার ও স্নেইপার রাইফেলেরগুলিতে তাদের চেষ্টা নিমেষেই ব্যর্থ হয়..
সাজোয়া যান নিয়ে যৌথ বাহিনী হেফাজতের বাধ ভেঙে ঢুকে যায় সমাবেশের মধ্যে....
প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়ে হেফাজত কর্মীরা বিভিন্ন ভবনেঢুকে যায়, আবার কেউ রাস্তা দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে....
রাস্তা দিয়ে যারা পালাতে চেষ্টা করে তারা ব্রাশ ফায়ারের সামনে পড়ে বেশির ভাগই স্পটে মারা যায়, কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হয়.....
এই হলো সংক্ষেপে দেড় ঘন্টার নৃশংস অভিযান...
যতদুর জানা যায়, কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি, অর্ডার ছিলো সরাসরি মেরে ফেলার.....।।।

লাশ কোথায়ঃ
মোট ৯ টি ট্রাকে করে লাশ নেয়া হয় এবং তুরাগসহ ৩টি নদীতে ভাগ ভাগ করে ফেলা হয়...

বর্তমান পরিস্থিতিঃ
সরকারের পক্ষ থেকে যৌথ বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন পালিয়ে যাওয়া
হেফাজত কর্মীরা বাড়ী ফিরতে না পারে....
এই উদ্দেশ্যে মাদারীপুরে অবস্থান নিয়েছে আর্মড পুলিশের টিম...
ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে আরেকটিটিম থাকার কথা আছে....
গনহত্যা শেষ হয়নি, আরো চলবে...সব মাদ্রাসায় চলবে অভিযান.....।

আর্মড পুলিশের যে ৩জন সদস্যএই তথ্য দিয়েছেন তারা গতকাল উপস্থিতছিলেন গনহত্যার স্পটে, তারা ছিলেন ব্যথিত, মর্মাহত....
তারা দেখেছেন বেশ কিছু কনস্টেবল পর্যায়ের পুলিশের চোখের পানি, কারো কিছুই করার ছিলনা, কারন সরকারের নির্দেশ মানতে তারা বাধ্য । তবে সরকারকেন তাদের গনহত্যার নির্দেশ দিলো সে সম্পর্কে তারা সন্দিহান । তদের ধারনা এটা ভারতের নির্দেশ........ ­­ ­..
collected
গতরাতে মতিঝিল ‘অপারেশন ফ্রিডম' নামক গণহত্যার বিবরণঃ
(Exclusive News...By News & Entertainment)
(১০০% সঠিক সংবাদ, সুত্রঃ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কয়েকজন পুলিশ,
আল্লাহর কসম প্রতিটি লাইন সেই পুলিশদের বলা)

অপারেশনঃ
গতকাল রাতের গনহত্যায় মৃতেরসংখ্য‍া ২৫০০ (আড়াই হাজার) এরও বেশি,
গনহত্যায় অংশ নেয় র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও প্রফেশনাল শুটার এর দল...
প্রফেশনাল শুটারদের কথা সাধারন মানুষ জানতেই পারেনি.....
কারন, প্রফেশনাল শুটাররা সব উচু ভবনের ছাদে ছিল, এবং তারা ব্যবহারকরেছে স্নেইপার রাইফেল, যা বাংলাদেশের কোন বাহিনী এই প্রথম ব্যবহার করল....
র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবির কয়েকটি টিম একসাথে ব্রাশফায়ার করা শুরু করে....
ঠিক একই সময়ে প্রফেশনাল শুটাররা স্নেইপার রাইফেল দিয়ে বুক ও মাথা তাক করে গুলি করে...
একই সাথে চলে টিয়ার শেল, গরম পানি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ..
বেশিরভাগ হেফাজত কর্মীরা ঘুমিয়ে থাকায় হঠাত চতুর্মুখি আক্রমনে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে হেফাজতকর্মীরা...কিছু হেফাজত কর্মী প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেওব্রাশ ফায়ার ও স্নেইপার রাইফেলেরগুলিতে তাদের চেষ্টা নিমেষেই ব্যর্থ হয়..
সাজোয়া যান নিয়ে যৌথ বাহিনী হেফাজতের বাধ ভেঙে ঢুকে যায় সমাবেশের মধ্যে....
প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়ে হেফাজত কর্মীরা বিভিন্ন ভবনেঢুকে যায়, আবার কেউ রাস্তা দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে....
রাস্তা দিয়ে যারা পালাতে চেষ্টা করে তারা ব্রাশ ফায়ারের সামনে পড়ে বেশির ভাগই স্পটে মারা যায়, কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হয়.....
এই হলো সংক্ষেপে দেড় ঘন্টার নৃশংস অভিযান...
যতদুর জানা যায়, কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি, অর্ডার ছিলো সরাসরি মেরে ফেলার.....।।।

লাশ কোথায়ঃ
মোট ৯ টি ট্রাকে করে লাশ নেয়া হয় এবং তুরাগসহ ৩টি নদীতে ভাগ ভাগ করে ফেলা হয়...

বর্তমান পরিস্থিতিঃ
সরকারের পক্ষ থেকে যৌথ বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন পালিয়ে যাওয়া
হেফাজত কর্মীরা বাড়ী ফিরতে না পারে....
এই উদ্দেশ্যে মাদারীপুরে অবস্থান নিয়েছে আর্মড পুলিশের টিম...
ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে আরেকটিটিম থাকার কথা আছে....
গনহত্যা শেষ হয়নি, আরো চলবে...সব মাদ্রাসায় চলবে অভিযান.....।

আর্মড পুলিশের যে ৩জন সদস্যএই তথ্য দিয়েছেন তারা গতকাল উপস্থিতছিলেন গনহত্যার স্পটে, তারা ছিলেন ব্যথিত, মর্মাহত....
তারা দেখেছেন বেশ কিছু কনস্টেবল পর্যায়ের পুলিশের চোখের পানি, কারো কিছুই করার ছিলনা, কারন সরকারের নির্দেশ মানতে তারা বাধ্য । তবে সরকারকেন তাদের গনহত্যার নির্দেশ দিলো সে সম্পর্কে তারা সন্দিহান । তদের ধারনা এটা ভারতের নির্দেশ........ ­­ ­..
collected

হেফাজত কালরাত্রী০১


আমার পেশাগত জীবনের দীর্ঘ ১৪ বছরের মধ্য গতরাতের মতো এতো কঠিন পরিস্থিথির মুখে কোনদিন পড়িনি। জীবনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একাধিকবার ভয়ানক দুষ্কৃতিকারীদের সাথে গোলাগুলি করেছি । কিন্তু একবারও হাত কাঁপেনি। একবারও মনের মাঝে অপরাধবোধ কাজ করেনি । কিন্তু গতরাতের অবস্থা ছিল পুরোটা ভিন্ন ।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে আমাদের অনেক সময় মানুষ থেকে কুকুরে পরিনত হতে হয় । কারন পশু না হলে আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করতে সবসময় পারবেন না । দায়িত্ব পালন ঠিক মতো না হলে বউ বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে । ঠিক যেমনটি হতে হয়েছিল গতকাল । একটি শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মুখোমুখি হয়েছিলাম যা সারা জীবন হয়তো আমাকে তাড়া করবে যার নাম ‘অপারেশন ফ্রিডম ‘, অপারেশন ফ্রিডমের একটা মোহড়া গতকালেই আমরা দিয়ে দিলাম যা সবাইকে সংক্ষেপে একটু বলি ।
বিকালে একদিকে হেফাজত কর্মীদের দোকানপাট, রাস্তাঘাটে লাগানো আগুন নিভাচ্ছিলাম অন্যদিকে হেফাজত কর্মীদের মতিঝিল থেকে যে কোন মূল্য সরিয়ে দেয়ার জন্য ভয়াবহ আগুন জ্বালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম । রাত ২.৩০ মিনিট । একটা যুদ্ধের প্রস্তুতির মতোই ভারী অস্রসস্র নিয়ে আমরা সংখ্যায় তিন বাহিনী মিলে ১০/১১ হাজার মানুষ পলটন থেকে মতিঝিলে যাওয়া শুরু করলাম । পল্টনে দেখা মিললো বিএনপি, ছাত্রদলের শো দুয়েক কর্মীর। যাদের সবাইকে পল্টন ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো । আমাদের রণসাজ দেখে ঐ শো দুয়েক কর্মী কোনরকম বাৎচিত করার সাহস পেলো না। মতিঝিলে প্রবেশের তিনটি পথ বন্ধ করে দিয়ে শুধুমাত্র টিকাটুলি যাওয়ার রাস্তা খোলা রাখলাম । হেফাজতের মঞ্চ থেকে মাইকে তখন ‘আল্লাহ ,আল্লাহ ‘ জিকির শোনা যাচ্ছিল । অপারেশন কমান্ডার হ্যান্ড মাইকে হেফাজত কর্মীদের মতিঝিল থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলেন । কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে সরে না যাওয়ার ঘোষণা আসলো। এরপর আর কোন সুযোগ না দিয়ে তিনদিক থেকে ঘিরে রাখা সবাই একসাথে চোখ বন্ধ করে গুলি করা শুরু করলাম। সবার বন্দুকের নল বুক বরাবর তাক করা। আমি প্রথম ১/২ মিনিট বুক বরাবর নল তাক করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সামনের দিকে এগোতে লাগলাম অন্য সবার মতো । এরপর নিজের বন্দুকের নলটি আরেকটু নিচের দিকে নামিয়ে পা বরাবর গুলি করতে লাগলাম হয়তো কোন বিবেকের তাড়নায় । ১৫/২০ মিনিট অবিরাম গুলিবর্ষণ চলতে লাগলো কমান্ডারের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত । কত শত /হাজার রাউনড গুলি ছোড়া হয়েছে তার কোন হিসাব নেই , হিসাব মেলানোও যাবে না । কারন তখন আমরা ১০ হাজার মানুষ থেকে ১০ হাজার পশু ছিলাম । হেফাজত কর্মীরা শাপলা চত্বর থেকে পিছু হটে টিকাটুলি , হাটখোলার বিভিন্ন গলিতে ঢুকে গেলো । আমাদের অবিরাম গুলিও বন্ধ হয়ে গেলো । শাপলা চত্বর নির্দেশ মোতাবেক নিজেদের দখলে নিলাম । যখন গুলি থামলো তখন ধোঁয়াচ্ছন্ন চারদিক। ধোঁয়া সরে যখন একটু পরিস্কার হলো তখন দেখি শত শত নিথর দেহ, স্যান্ডেল , টুপি, ব্যাগ, পানির বোতল আর রক্ত । নিজেকে অনেক কষ্টে সামলে নিলাম । কতশত নিহত আর কতশত আহত হয়েছে তা গোনার সময় নেই , কারন যত কিছুই ঘটুক তা এই রাতের আধারেই ধুয়ে মুছে শেষ করতে হবে । সময় খুব কম । তাই বারবার তাগাদা আসছিল সব ধুয়ে মুছে পরিস্কার করার জন্য । মাঝে মাঝে নিজের বন্দুকের নলটি নিজের বুকের মাঝে তাক করছিলাম প্রচণ্ড ঘৃণায় , ক্ষোভ নিয়ে । কতজন নিহত হবে ? ১০০/৫০০/১০০০ বা তারও অনেক বেশি ? কিভাবে হিসাব করে? কার কি আসে যায়? আমি আমার চেয়ারে থাকতে পারলেই তো হলো । এই চেয়ার আমার, আমার বাপদাদার সম্পত্তি। এই চেয়ার আমি কাউকে দিবো না , কাউকে দিবো না । তার জন্য যদি আমাকে আরও লক্ষ লাশ ফেলতে হয় আমি ফেলবো । পশুদের এই রাজত্বে আমি একটি মানুষকেও রাখবো । শুধু থাকবে পশু আর আমি থাকবো সেই পশুদের রাজা ‘পশুরাজ’ হয়ে আমৃত্যু পর্যন্ত । আমার শুধু ভয় একটাই তা হলো ‘যে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম সেই আগুন যদি পশুদের এই রাজত্বকেও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় ‘ তখন কি হবে ? জানিনা, জানতেও চাইনা ।http://www.parisvisionnews.com/2011-07-14-13-36-49/69-political-news/7020-2013-05-06-16-09-59.html#.UYfXEbTCjBZ.facebook